মধ্যপ্রাচ্যের দেশ দুবাইয়ে বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসীদের সংখ্যা প্রায় ৭ লক্ষ। তাদের মধ্যে অনেকেই চায় দুবাই থেকে ইউরোপের সেনজেন ভুক্ত দেশ ইতালিতে চলে যেতে। কিন্তু দুবাই থেকে ইতালি যাওয়ার উপায় সম্পর্কে অনেকেরই অজানা। কি কি ডকুমেন্টের প্রয়োজন হয় বা কিভাবে পুরো প্রসেসিংটা কমপ্লিট করবেন তার আদ্যোপান্ত জানা অবশ্যই জরুরি।
ইতাালি হলো ইউরোপের সমৃদ্ধশালী একটি দেশ। ২০২২ সালের হিসেব অনুযায়ী দেশটির জিডিপি 2.05 trillion USD ডলার। অন্যদিকে আরব আমিরাত বা দুইয়ের জিডিপি 507.1 billion USD ডলার। বুঝতেই পারছেন দুবাই থেকে ইতালি কত বেশি ধনী রাস্ট্র।
ইতালি যাওয়া যদিও একটি চ্যালেঞ্জ। তবে অসম্ভব কিছু না। বৈধ পথে ইতালি যাওয়ার জন্য আপনাকে কিছু নিয়ম কানুন মানতে হবে এবং তাদের কিছু রিকোমান্ডেশন পূরণ করতে হবে।
দুবাই থেকে ইতালি যাওয়ার উপায়
দুবাইয়ে বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসীরা যদি ইতালিতে যেতে চান, তাহলে তাদের জন্য কিছু নির্দিষ্ট ধাপ অনুসরণ করা জরুরি। এই প্রক্রিয়াটি বেশ কয়েকটি ধাপের মাধ্যমে সম্পন্ন হয় এবং এটি যথেষ্ট সময় ও বিভিন্ন কাগজপত্রের প্রয়োজন হতে পারে। নিচে আমরা এই প্রক্রিয়াটি ধাপে ধাপে ব্যাখ্যা করছি।
১. পাসপোর্ট প্রস্তুতি
প্রথমেই আপনার একটি বৈধ পাসপোর্ট থাকতে হবে এবং পাসপোর্টের মেয়াদ অন্তত ছয় মাস থাকা জরুরি। যদি আপনার পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হতে চলেছে এমন হয়, তাহলে তা নবায়ন করে নিতে হবে।
২. ভিসার ধরন নির্ধারণ
ইতালিতে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন ধরনের ভিসা রয়েছে, যেমন পর্যটন ভিসা, শিক্ষার্থী ভিসা, ব্যবসায়িক ভিসা বা কাজের ভিসা। আপনি কোন উদ্দেশ্যে ইতালিতে যেতে চান, তার উপর ভিত্তি করে ভিসার ধরন নির্ধারণ করুন।
৩. ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া
ইতালির ভিসা জন্য প্রথমেই আপনাকে অনলাইনে ইতালি ভিসা আবেদন ফর্ম পূরণ করতে হবে। এই ফর্মটি ইতালির এম্বাসির ওয়েবসাইটে পেয়ে যাবেন।
আবেদনের সময়ে আপনার পাসপোর্ট, দুবাইয়ের রেসিডেন্স পারমিট, ছবিসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রগুলো তখন সাবমিট করতে হবে।
ক) প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস:
- পূরণকৃত ভিসা আবেদন ফর্ম
- পাসপোর্ট সাইজের ছবি
- পাসপোর্টের ফটোকপি
- দুবাইতে আপনার বৈধ রেসিডেন্সি ভিসার কপি ইত্যাদি।
খ) আবেদন জমা:
দুবাইতে ইতালির কনস্যুলেট বা ভিসা আবেদন কেন্দ্রের মাধ্যমে আপনার আবেদনটি জমা দিতে হবে। আবেদন জমা দেওয়ার সময় নির্দিষ্ট ফি জমা দিতে হবে।
৪. সাক্ষাৎকার
তারপর কনস্যুলেটের মাধ্যমে একটি সাক্ষাৎকারের জন্য আপনাকে ডাকা হতে পারে। সাক্ষাৎকারে আপনার ভ্রমণের উদ্দেশ্য এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য সম্পর্কে জানতে চাওয়া হবে।
৫. ভিসা অনুমোদন
যদি সবকিছু ঠিকঠাক থাকে, তাহলে আপনার ভিসা অনুমোদিত হবে এবং আপনি আপনার পাসপোর্টে ভিসা স্ট্যাম্প পেয়ে যাবেন।
৬. ইতালিতে যাত্রা
ভিসা পাওয়ার পরে আপনি ইতালিতে যাত্রার জন্য প্রস্তুত। যাত্রার পূর্বে আপনার সমস্ত প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস গুলো সংগ্রহে রাখুন।
বর্তমানে ইতালিতে কাজের ভিসা পাওয়া খুবই কঠিনে হয়ে পড়েছে। তবে আপনি যদি দুবাইয়ে থাকা অবস্থায় আপনার বিজনেস ব্যাংক স্টেটমেন্ট বা সেলারি স্টেটমেন্টে প্রতি মাসে মিনিমাম ১৫০০ ইউ এস ডলার (USD) বা তার সমপরিমাণ বেতন দেখাতে পারেন, তবে আপনার দুবাইয়ের ভিসা হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় ৯৯.৯৯%।
শেষ কথা:
উপরোক্ত নিয়ম ফলো করেই আপনাকে দুবাই থেকে ইতালির ভিসা নিতে হবে। আর এটাই মূলত দুবাই থেকে ইতালি যাওয়ার উপায়। প্রক্রিয়াটি অনুসরণ করেই কেবল আপনি দুবাই থেকে ইতালি যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে পারেন। সঠিকভাবে প্রস্তুতি নিয়ে এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করে, আপনি সহজেই আপনার ভিসা প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করতে পারবেন।
