সুইজারল্যান্ড ইউরোপের একটি ধনী দেশ। বাংলাদেশ ও ভারত সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রবাসীরা জীবিকার তাকিদে ও উচ্চ মানের আয়ের জন্য সুইজারল্যান্ডে ওয়ার্ক ভিসা বা কাজের ভিসা নিয়ে যেতে চায়। তবে এটা সত্য যে, সুইজারল্যান্ড কাজের ভিসা পাওয়ার প্রক্রিয়া বেশ জটিল এবং এটি প্রধানত আপনার জাতীয়তা, যোগ্যতা এবং কাজের প্রস্তাবের উপর নির্ভর করে।
বাংলাদেশের অনেক অভিবাসী ও প্রবাসী ভাই-বোন আছেন, যারা ইতিমধ্যেই সুইজারল্যান্ডে বসবাস করছেন। সুইজারল্যান্ড ইউরোপের সেনজেন ভুক্ত দেশ হওয়ায় দেশটিতে বসবাসকারী মানুষের জীবনযাত্রার মানও অনেক ভালো। প্রবাসীদের জন্যও দেশটি অনেক ভালো মানের সেলারিতে চাকরি অফার করে।
সকলেই জানেন, ইউরোপের যে কোনো দেশেরই কাজের ভিসা পাওয়া অনেক কঠিন। আর এটাও জানেন ইউরোপ সেনজেন ও নন সেনজেনের মাধ্যমে দুই ভাবে বিভক্ত। সুইজারল্যান্ড যেহেতু সেনজেন ভুক্ত একটি দেশ, সেহেতু সুইজারল্যান্ডের কাজের ভিসা পেতে হলে আপনাকে কিছু ধাপ অনুসরণ করতে হবে।
সুইজারল্যান্ড কাজের ভিসা পাওয়ার প্রক্রিয়া
প্রথমেই বলে রাখি, আপনি ইচ্ছে করলেই সুইজারল্যান্ডের কাজের ভিসা স্বাভাবিক ভাবে পাবেন না। বিষয়টা এমন যে, সুইজারল্যান্ডের কোনো কোম্পানি যদি আপনাকে কাজের অফার করে এবং ভিসা দেয়, তবেই কেবল যেতে পারবেন।
১. কাজের প্রস্তাব
সুইজারল্যান্ডে কাজের জন্য যেতে হলে প্রথমেই সুইজারল্যান্ডের একটি কোম্পানি থেকে কাজের প্রস্তাব পেতে হবে। তারপর ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে, স্কিল টেস্ট ও ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে ভিসা নিশ্চিত করতে হবে। সোজা হিসেব, কাজের প্রস্তাব পাওয়া ছাড়া সুইজারল্যান্ডে কাজের ভিসা পাওয়া সম্ভব নয়।
২. ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া
কাজের প্রস্তাব পাওয়ার পর আপনার কিছু প্রয়োজনীয় নথিপত্রের প্রয়োজন হবে। –
(i) প্রয়োজনীয় নথিপত্র:
- বৈধ পাসপোর্ট
- কাজের চুক্তিপত্র (Employment Contract)
- শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণপত্র (সার্টিফিকেট)
- পেশাগত অভিজ্ঞতার প্রমাণপত্র
- কাজের অনুমতিপত্র (Work Permit) আবেদন ফর্ম ইত্যাদি।
(ii) আবেদনের প্রক্রিয়া:
১. কাজের প্রস্তাব পাওয়ার পর আপনার প্রয়োজনীয় নথিপত্র রেডি করবেন এবং আপনার নিয়োগকর্তা সুইজারল্যান্ডের ক্যান্টোনাল মাইগ্রেশন অফিসে (Cantonal Migration Office) কাজের অনুমতিপত্রের জন্য আবেদন করবেন।
২. ভিসা আবেদন প্রক্রিয়াটি সাধারণত কয়েক সপ্তাহ থেকে কয়েক মাস সময় নিতে পারে। সুইজারল্যান্ডের ক্যান্টোনাল মাইগ্রেশন অফিস কর্তৃক ভিসা অনুমোদিত হলে আপনি সুইজারল্যান্ডে কাজের ভিসায় যেতে পারবেন।
৩. ভিসা পেয়ে সুইজারল্যান্ডে পৌঁছানোর পরে আপনাকে স্থানীয় কর্তৃপক্ষের (Gemeinde or Cantonal Migration Office) সাথে নিবন্ধন করতে হবে এবং আপনার কাজের ভিসা এবং অনুমতিপত্র সক্রিয় করতে হবে।
সুইজারল্যান্ড সম্পর্কে তথ্য (About Switzerland) জানা থাকলে সম্পূর্ণ বিষয়টা ম্যানেজ করতে অনেক সহজ হবে।
শেষ কথা:
সুইজারল্যান্ড কাজের ভিসা পাওয়ার প্রক্রিয়া বেশ জটিল এবং এটি প্রধানত আপনার জাতীয়তা, যোগ্যতা এবং কাজের প্রস্তাবের উপর নির্ভর করবে। তবে ভিসা পেয়ে গেলে আর কোনো জটিলতা নেই।
প্রাথমিক ভাবে এটাই মনে রাখুন যে, সুইজারল্যান্ড কাজের ভিসা পেতে হলে আপনাকে সুইজারল্যান্ডের কোনো একটি কোম্পানি থেকে কাজের প্রস্তাব পাওয়া গুরুত্বপূর্ণ এবং সেই অনুযায়ী উপযুক্ত ভিসা আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।