eProbash

প্রবাসী-প্রেরিত অর্থ বা রেমিট্যান্স পরিসংখ্যান ২০১২ – ২০২৪

প্রবাসী-প্রেরিত অর্থ পরিসংখ্যান
Written by eProbash

প্রবাসী-প্রেরিত অর্থ, যা রেমিট্যান্স নামেও পরিচিত। বিদেশে কর্মরত ব্যক্তিরা তাদের স্বদেশে পরিবার ও প্রিয়জনদের কাছে পাঠানো অর্থকেই প্রেরিত অর্থ বা রেমিট্যান্স বলে। এই অর্থ সাধারণত বিভিন্ন ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে দেশে পাঠানো হয়।

প্রবাসীরা বিভিন্ন উপায়ে আয় করে থাকেন, যেমন চাকরি, ব্যবসা -বাণিজ্য, বিনিয়োগ ইত্যাদি। তাদের আয়ের একটি অংশ তারা নিয়মিতভাবে পরিবার পরিজনের কাছে পাঠায়। এই অর্থ ব্যবহার করে তাদের পরিবার-পরিজানেরা খাবার, পোশাক, বাসস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ইত্যাদি সহ সকল মৌলিক চাহিদা পূরণ করে।

প্রবাসী-প্রেরিত অর্থ দেশের অর্থনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং বাংলাদেশের জিডিপিতে (GDP) প্রবাসীদের প্রেরিত অর্থের বিশেষ প্রভাব লক্ষ্য করা যায়।  ২০১২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ পরিমাণ প্রবাসী-প্রেরিত অর্থগ্রহীতা রাষ্ট্রসমূহের নাম চলুন জেনে নিই।

বাংলাদেশে প্রবাসী-প্রেরিত অর্থ বা রেমিট্যান্স পরিসংখ্যান

২০১২ সাল থেকে ২০২৪ সালের আগ পর্যন্ত প্রবাসীদের রেমিট্যান্সের মাধ্যমে যেই দেশ গুলো র‌্যাঙ্কিংয়ে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে রয়েছে তার একটি পরিসংখ্যান নিচে উপস্থাপন করা হলো।

Note: অর্থ প্রেরণের হিসেবটি হাজার কোটি মার্কিন ডলারে করা হয়েছে।

দেশের নাম (র‌্যাঙ্কিং) ২০১২ সালে মোট প্রবাসী-প্রেরিত অর্থ
১. ভারত ৬.৮৮২
২. চীন ৫.৭৯৯
৩. ফিলিপাইন ২.৪৬১
৪. মেক্সিকো ২.৩৩৭
৫. নাইজেরিয়া ২.০৬৩
৬. মিশর ১.৯২৪
৭. বাংলাদেশ ১.৪২৪
৮. পাকিস্তান ১.৪০১
৯. ভিয়েতনাম ১.০০
দেশের নাম (র‌্যাঙ্কিং) ২০১৩ সালে মোট প্রবাসী-প্রেরিত অর্থ
১. ভারত ৬.৯৯৭
২. চীন ৫.৯৪৯
৩. ফিলিপাইন ২.৬৭
৪. মেক্সিকো ২.৩০২
৫. নাইজেরিয়া ২.০৮৯
৬. মিশর ১.৭৮৩
৭. পাকিস্তান ১.৪৬৩
৮. বাংলাদেশ ১.৩৮৬
৯. ভিয়েতনাম ১.১০
দেশের নাম (র‌্যাঙ্কিং) ২০১৪ সালে মোট প্রবাসী-প্রেরিত অর্থ
১. ভারত ৭.০৯৭
২. চীন ৬.১৪৯
৩. ফিলিপাইন ২.৭৯
৪. মেক্সিকো ২.৪৫
৫. নাইজেরিয়া ২.০৪৪
৬. মিশর ১.৯৮৩
৭. পাকিস্তান ১.৭৮
৮. বাংলাদেশ ১.৫১০
৯. ভিয়েতনাম ১.১৮
দেশের নাম (র‌্যাঙ্কিং) ২০১৫ সালে মোট প্রবাসী-প্রেরিত অর্থ
১. ভারত ৭.২২০
২. চীন ৬.৩৯
৩. ফিলিপাইন ২.৯৮
৪. মেক্সিকো ২.৫৭
৫. নাইজেরিয়া ২.০৮৯
৬. মিশর ২.০৪
৭. পাকিস্তান ২.০১
৮. বাংলাদেশ ১.৫৮০
৯. ভিয়েতনাম ১.২৩
দেশের নাম (র‌্যাঙ্কিং) ২০১৬ সালে মোট প্রবাসী-প্রেরিত অর্থ
১. ভারত ৬.২৭
২. চীন ৬.১
৩. ফিলিপাইন ২.৯৯
৪. মেক্সিকো ২.৮৫
৫. নাইজেরিয়া ১.৯
৬. পাকিস্তান ১.৯৮
৭. মিশর ১.৬৬
৮. ভিয়েতনাম ১.৩৪
৯. বাংলাদেশ ১.৩৭
দেশের নাম (র‌্যাঙ্কিং) ২০১৭ সালে মোট প্রবাসী-প্রেরিত অর্থ
১. ভারত ৬.৯
২. চীন ৬.৪
৩. ফিলিপাইন ৩.৩
৪. মেক্সিকো ৩.১
৫. নাইজেরিয়া ২.২
৬. মিশর ২.০০
৭. পাকিস্তান ২.০
৮. ভিয়েতনাম ১.৪
৯. বাংলাদেশ ১.৩

তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া

এগুলো হলো প্রবাসী-প্রেরিত অর্থের বিশ্বব্যাপী একটি পরিসংখ্যান। এখন আমরা দেখবো ২০১৮ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশি প্রবাসীরা বৈধভাবে অর্থাৎ ব্যাংকিং চ্যানেলে কোন বছর কত রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে।

বাংলাদেশের বছরভিত্তিক রেমিট্যান্স ২০১৮ – ২০২৩

সাল মোট প্রবাসী-প্রেরিত অর্থ
২০১৮ ১ হাজার ৫৫৫ কোটি মার্কিন ডলার
২০১৯ ১ হাজার ৮৩৩ কোটি মার্কিন ডলার
২০২০ ২ হাজার ১৭৪ কোটি মার্কিন ডলার
২০২১ ২ হাজার ২০৭ কোটি মার্কিন ডলার
২০২২ ২ হাজার ১২৯ কোটি মার্কিন ডলার
২০২৩ ২ হাজার ১৯২ কোটি মার্কিন ডলার

তথ্যসূত্র: ঢাকা পোস্ট

বাংলাদেশি প্রবাসীদের সংখ্যা প্রতি বছর যেভাবে বাড়ছে, ঠিক তেমনীভাবে রেমিট্যান্সের সংখ্যাও বাড়ছে। উপরের পরিসংখ্যানটি কেবল বৈধ পথে ব্যাংকিং চ্যানেলে আসা রেমিট্যান্স। অবৈধ পথে হুন্ডির মাধ্যমেও লক্ষ লক্ষ ডলার দেশে আসে।

প্রবাসি-প্রেরিত অর্থের প্রভাব

প্রবাসীদের মাধ্যমে দেশে আসা অর্থ শুধু প্রবাসীদের পরিবার -পরিজনের জন্যই শুধু কল্যাণ বয়ে আনে না, বরং দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণেও রেমিট্যান্স খুবই কার্যকরী ভূমিকা রাখে।

পরিবার ও পরিজনের জন্য

  • আয় বৃদ্ধি করে এবং দারিদ্র্যতা বিমোচনে সহায়তা করে।
  • শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও পুষ্টি উন্নতিতে অবদান রাখে।
  • জীবনযাত্রার মান উন্নত করে।
  • নতুন ব্যবসা ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে।

দেশের অর্থনীতির জন্য

  • বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি করে।
  • স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নে অবদান রাখে।
  • বিনিয়োগ ও অবকাঠামো উন্নয়নে সহায়তা করে।
  • দারিদ্র্য হ্রাসে ভূমিকা রাখে।

প্রবাসী প্রেরিত অর্থের মাধ্যমে দেশ ও দেশের সকল নাগরিকই উপকৃত হয়। তাই প্রবাসী-প্রেরিত রেমিট্যান্সের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সরকারকে বিভিন্ন প্রদক্ষেপ নিতে হবে।

রেমিট্যান্স পাঠানোর জন্য প্রায়শই উচ্চ লেনদেন খরচ লাগে, যা প্রবাসীদের জন্য বোঝা হয়ে যায়।  এজন্য দেখা যায় প্রবাসীদের অনেকেই ব্যাংকিং চ্যানেলে টাকা না পাঠিয়ে হুন্ডি টাকার রেট বেশি পাওয়ায় এই অবৈধ পথ বেছে নেয়।

শেষ কথা:

প্রবাসী-প্রেরিত অর্থ উন্নয়নশীল দেশের অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে লেনদেন খরচ কমানো, প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা এবং অর্থনৈতিক নির্ভরতা কমানোর জন্য আরো বিভিন্ন নীতিমালা প্রণয়ন ও প্রদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি।

About the author

eProbash

প্রবাসীদের প্রতি অকৃত্রিম হৃদয়ের টান, তাদের প্রতি অফুরন্ত ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা রেখে তাদের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে পেরে গর্ববোধ করি।

Leave a Comment