ট্যুরিজম

বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কয়টি ও কি কি?

বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কয়টি ও কি কি
Written by eProbash

বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কয়টি ও কি কি?

বাংলাদেশে মোট তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর রয়েছে। ১. হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, ঢাকা। ২. শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, চট্টগ্রাম ও ৩. ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, সিলেট ইত্যাদি। বাংলাদেশের চতুর্থ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কক্সবাজারে হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

১. হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (ঢাকা)

এটি বাংলাদেশের প্রধান এবং বৃহত্তম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, যা ঢাকার কুর্মিটোলায় অবস্থিত।  আইএটিএ কোড: DAC, আইসিএও কোড: VGZR, উচ্চতা: সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৮.২৩ মিটার এবং পরিচালক: বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (CAAB)।

১৯৮০ সালে এর কার্যক্রম শুরু হয়। পূর্বে বাংলাদেশের একমাত্র আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর তেজগাঁও বিমানবন্দর থেকে স্থানান্তর করা হয়। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, এয়ার অ্যাস্ট্রা, নভোএয়ার এবং ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স সহ বাংলাদেশের সকল এয়ার লাইন্সের হোম বেস।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দেশের প্রধান এবং বৃহত্তম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। এটিতে ৪টি টার্মিনাল রয়েছে: টার্মিনাল ১: আন্তর্জাতিক যাত্রীদের জন্য। টার্মিনাল ২: আভ্যন্তরীণ যাত্রীদের জন্য। টার্মিনাল ৩: মালবাহনার জন্য এবং টার্মিনাল ৪: ভিআইপি এবং কার্গোর জন্য।

বিমানবন্দরটিতে দুটি রানওয়ে রয়েছে। বার্ষিক যাত্রী পরিবহন ক্ষমতা: ১৮.৫ মিলিয়ন। বার্ষিক মাল পরিবহন ক্ষমতা: ৫০০,০০০ টন।  বিমানবন্দরটিতে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে: ডিউটি-ফ্রি দোকান, রেস্তোরাঁ, ক্যাফে,  লাউঞ্জ, মুদ্রা বিনিময় কেন্দ্র, এটিএম, ব্যাংক, ওয়াইফাই ও নিরাপত্তা ইত্যাদি।

২. শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (চট্টগ্রাম)

এটি চট্টগ্রাম শহরের কেন্দ্র থেকে প্রায় ৭ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত। বিমানবন্দরটির অবস্থান: পতেঙ্গা, চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ। আইএটিএ কোড: CGP, আইসিএও কোড: VGCB, উচ্চতা: সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩.৬৬ মিটার এবং পরিচালক: বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (CAAB)।

শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি ১৯৪০ সালে নির্মিত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় রয়্যাল এয়ার ফোর্স দ্বারা একটি সামরিক বিমানবন্দর হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রূপান্তরিত হয়। ২০০৪ সালে বিখ্যাত সুফি সাধক শাহ আমানতের নামে নামকরণ করা হয়।

শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। এটিতে রয়েছে দুটি টার্মিনাল: টার্মিনাল ১: আন্তর্জাতিক যাত্রীদের জন্য এবং টার্মিনাল ২: আভ্যন্তরীণ যাত্রীদের জন্য।

বিমানবন্দরটিতে একটি রানওয়ে রয়েছে। বার্ষিক যাত্রী পরিবহন ক্ষমতা: ৫.৫ মিলিয়ন। বার্ষিক মাল পরিবহন ক্ষমতা: ১০০,০০০ টন। তাছাড়া বিমানবন্দরে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে: ডিউটি-ফ্রি দোকান, রেস্তোরাঁ, ক্যাফে, লাউঞ্জ, মুদ্রা বিনিময় কেন্দ্র, এটিএম, ব্যাংক, ওয়াইফাই ও নিরাপত্তা ইত্যাদি।

৩. ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (সিলেট)

এটি সিলেট শহরের কেন্দ্র থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত। বিমানবন্দরটির অবস্থান: বড়শাল, সিলেট, বাংলাদেশ। আইএটিএ কোড: ZYL, আইসিএও কোড: VGSY, উচ্চতা: সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৫ মিটার এবং পরিচালক: বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (CAAB)।

ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি ১৯৪৩ সালে নির্মিত হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় রয়্যাল এয়ার ফোর্স দ্বারা একটি সামরিক বিমানবন্দর হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রূপান্তরিত হয়। ১৯৭২ সালে মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ক জেনারেল (অবসর) খোন্দকার মোস্তাফা ওসমানীর নামে নামকরণ করা হয়।

ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। এতে রয়েছে একটি টার্মিনাল ও একটি রানওয়ে। বার্ষিক যাত্রী পরিবহন ক্ষমতা: ৩.৫ মিলিয়ন। বার্ষিক মাল পরিবহন ক্ষমতা: ৫০,০০০ টন। উপরোক্ত দুটি বিমানবন্দরের মতই এত রয়েছে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা।

এই তিনটি বিমানবন্দর ছাড়াও বাংলাদেশে আরও পাঁচটি অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর রয়েছে:

  • বরিশাল বিমানবন্দর
  • যশোর বিমানবন্দর
  • রাজশাহী বিমানবন্দর
  • সৈয়দপুর বিমানবন্দর
  • কক্সবাজার বিমানবন্দর

এছাড়াও, সাতটি স্বল্প পরিসরের বিমানবন্দর রয়েছে যেখানে শুধুমাত্র হালকা বিমান ও হেলিকপ্টার অবতরণ করতে পারে।

বাংলাদেশের চতুর্থ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর

চতুর্থ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হওয়ার জন্য কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সবচেয়ে বেশি সম্ভাবনাময়। কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সম্পর্কে কিছু তথ্য: বিমানবন্দরটির অবস্থান: কক্সবাজার, বাংলাদেশ।

বিমানবন্দরটির বর্তমান অবস্থা: অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর। উন্নয়ন পরিকল্পনা: আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রূপান্তরের কাজ চলতেছে। লক্ষ্য: পর্যটন শিল্পকে আরও উন্নত করা। বৈশিষ্ট্য: দেশের দীর্ঘতম রানওয়ে, আধুনিক টার্মিনাল ভবন ও বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ইত্যাদি।

কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রূপান্তরিত হলে তা বাংলাদেশের পর্যটন শিল্পের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হবে। এটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আরও বেশি পর্যটক আকর্ষণ করবে এবং দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখবে বলে ধারণা করা হয়।

শেষ কথা:

বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কয়টি ও কি কি আশাকরি তা নিশ্চয় নামসহ বিস্তারিত জেনে গিয়েছেন। বর্তমানে বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক ৩ টি বিমানবন্দর বিদ্যামান রয়েছে। বাংলাদেশের চতুর্থ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাজও ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে। এটি সম্পন্ন হলে বাংলাদেশের মোট আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হবে ৪ টি।

তবে দেশের অভ্যন্তরীণ ভ্রমণের জন্য ছোটখাটো বেশকিছু বিমানবন্দর রয়েছে। যেগুলোতে শুধুমাত্র হালকা বিমান ও হেলিকপ্টার অবতরণ করতে পারে। যাইহোক, আশাকরি  বর্তমানে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কয়টি তা জানতে পেরেছেন।

Note: এই ব্লগের সকল তথ্য ইন্টারনেট থেকে নেওয়া। সর্বশেষ ও আপডেট তথ্য পেতে বিমানবন্দরের ওয়েবসাইট গুলো ভিজিট করুন। ধন্যবাদ

About the author

eProbash

প্রবাসীদের প্রতি অকৃত্রিম হৃদয়ের টান, তাদের প্রতি অফুরন্ত ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা রেখে তাদের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে পেরে গর্ববোধ করি।

Leave a Comment